• ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

অনুমতি ছাড়া স্কুলের গাছ কর্তন

admin
প্রকাশিত মার্চ ৮, ২০১৯, ১৩:৪৮ অপরাহ্ণ
অনুমতি ছাড়া স্কুলের গাছ কর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বনবিভাগের ছাড়পত্রের পাশাপাশি দরপত্র আহ্বান ছাড়াই স্কুলের বাথরুম নির্মাণের নামে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কর্তন করা হয়েছে। কর্তনকৃত গাছের মধ্যে আমলকী, অর্জুনসহ বিভিন্ন ঔষুধি, ফলজ ও বনজ গাছ রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যে গাছ কাটা হলেও নেওয়া হয়নি বন বিভাগের ছাড়পত্র। তাছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে একের পর এক গাছ কাটার ফলে এক সময়ের গ্রিন ক্যাম্পাস নামে পরিচিত হালিমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়টি এখন চারণ ভূমিতে রূপ নিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল সকাল থেকে হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পূর্ব পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক দাঁড়িয়ে থেকে শ্রমিক দিয়ে গাছ কাটাচ্ছেন। দুপুর পর্যন্ত অন্তত ১৫টি’র মত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুসরণ কিংবা বন বিভাগের অনুমতির প্রয়োজন মনে করেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা জানান, আর আগেও স্কুল ক্যাম্পাসের পূর্ব পাশের বড় আকারের প্রায় ৩০টির মত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল ভবন। ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাশে গ্রন্থাগার নির্মাণ করতে গিয়ে কাটা হয়েছে আরো ৫টি গাছ। প্রধান শিক্ষকের নিজস্ব কোয়ার্টার নির্মাণের জন্য ইতিপূর্বে কাটা হয়েছে রেইন্ট্রি, নারীকেল, সুপারিসহ বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ কাটা কেটে ফেলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম ফখরুজ্জামান বলেন, আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার। এদের জন্য পর্যাপ্ত বাথরুমের ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে ১০টি বাথরুম রয়েছে তাদের ব্যবহারের জন্য। তাই আরো একটি বাথরুম বানাতে ৬/৭টি গাছ কাটা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে গাছ কাটার বিষয়ে বনবিভাগের কোন অনুমতির প্রয়োজন মনে হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে স্কুল সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্কুলে মোট ১৫টির অধিক বাথরুম রয়েছে। তার পরেও বাথরুম নির্মাণের জন্য প্রজেক্ট থেকে পাওয়া অর্থ হজম করতেই গাছ কেটে নতুন করে আরো একটি বাথরুম নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। অথচ ক্যাম্পাসের মধ্যেই দুটি বাথরুম রয়েছে পরিত্যক্ত। ওই দুটি বাথরুম সংস্কারের উদ্যোগ না থাকলেও প্রধান শিক্ষক গাছ কেটে নতুন বাথরুম বানাচ্ছেন। আর গাছগুলো তিনি নিজেই বিক্রি এবং লাকড়ি বানাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, সামাজিক বন বিভাগ বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম বলেন, হালিমা খাতুন স্কুলটির নাম শুনেছি অনেক। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী স্কুল। কিন্তু এখানে গাছ কাটা হচ্ছে এমন কোন বিষয় আমাদের জানা নেই। আর আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতিও নেয়া হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোনভাবেই অনুমতিবিহীন স্কুলের গাছ কাটতে পারে না। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের গাছ কাটা সংক্রান্ত কমিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাছ কাটার অনুমতি দিবেন। তা না হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে। হালিমা খাতুন স্কুলে গাছ কাটার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।