বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল ॥ বরিশালের আড়তগুলোতে আলুর হা হা কার দেখা দিয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার কোনো ব্যাপারি আলু নিয়ে আসেনি। ফলে বরিশালের আড়তে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটার পর থেকে আলু নেই। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কোল্ডস্টোরেজ মালিকরা আলু বিক্রি না করছেনা বলে অভিযোগ ব্যাপারীদের। অধিক দামে আলু কিনে তা বিক্রি করতে পারবে বলে তারা ব্যাপারীরা বরিশালের আড়তে আনছে না। এ কারণে বরিশালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার শঙ্কা ব্যাপারীসহ আড়তদারদের।
বরিশালের একাধিক আলুর ব্যাপারি ও আড়তদার জানান, সোম ও মঙ্গলবার চাহিদার তুলনায় অল্প আলু বরিশালের আড়তগুলোতে আনা হয়েছিলো। তা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। অধিক দামের কারণে বুধ ও বৃহস্পতিবার কোন ব্যাপারী আলু কিনে আনতে পানেনি। রাজশাহী বা মুন্সিগঞ্জের কোন কোল্ডস্টোরেজ থেকে সরকার নির্ধারিত ২৭-২৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। বর্তমানে কোল্ডস্টোরেজ মালিকরা ব্যাপারীদের কাছে যে দাম চাচ্ছে তাতে পরিবহণ ও শ্রমিক খরচসহ কেজি প্রতি ৪০ টাকা খরচ হয়ে যাবে। পাশাপাশি দাম বেশি নিলেও কম দাম উল্লেখ করে ভাউচার দিতে চায় কোল্ডস্টোরেজের মালিকরা। ব্যাপারীরা তাতে রাজি হচ্ছেনা। বাজার নিয়ন্ত্রণে বরিশাল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালালেও ব্যাপারীদের ক্রয় রশিদ দেখে চলে আসছেন। কারণ ব্যাপারীরা বলছে অধিক দামে আলু কিনতে হয়। কোল্ডস্টোরেজের মালিকরা কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সরকারি রেট মানছে না। এমন পরিস্থিতিতে আলু সরবরাহ ঠিক না থাকায় আড়ত শূন্য হয়েছে।
বরিশাল নগরীর ফরিয়াপট্টির আড়তদার সজল দত্ত জানান, দুই দিন ধরে বরিশালের আড়তে আলু নিয়ে আসছে না ব্যাপারীরা। তাই স্বাভাবিকভাবেই আলু শেষ হয়ে গেছে। সরকার নির্ধারিত দামে আলু না পাওয়ায় ব্যাপারীরা আলু কিনছে না। তাই আমার আড়তও শূন্য। কবে এই সমস্যার সমাধান হবে তাও বলতে পারছিনা। এমনিভাবে চলতে থাকলে আলুর বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পরবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাপারী বলেন, দেশের কোন কোল্ডস্টোরেজেই সরকার নির্ধারিত এক কেজি আলু ২৭-২৮ টাকায় বিক্রি করছেনা কোল্ডস্টোরেজের মালিকরা। সোমবার রাজশাহীর কোল্ডস্টোরেজ বাগদাদ এন্টারপ্রাইজ এক কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সায়। রাজশাহী থেকে ট্রাক বরিশালে ভাড়া করে আনতে ভাড়া খরচ হয় সাড়ে ২৪ হাজার টাকা। ৬৫ কেজি ওজনের ৩২৫ বস্তা আলু একটি ট্রাকে আনা যায়। পাশাপাশি শ্রমিক খরচ সাড়ে তিন হাজার।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, আলু নেই যে তা নয়, সরবরাহ কম। তবে তা দু’একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। যদি আলুর সরবরাহ কমে যায় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। কোল্ডস্টোরেজগুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের অভিযান চলছে। আমার বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখতে ব্যাপারী, আড়তদার, ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করেছি। বাজারে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হবেনা ।