সুনান বিন মাহাবুব, পটুয়াখালীঃ ১৯ সেপ্টেম্বর সাগর ট্রাজেডির দিন। ২০০৬ সালের এই দিনে সাগরের ভয়াল ঢেউয়ের তান্ডবে প্রাণ হারিয়েছিলেন শতাধিক জেলে। পটুয়াখালীর উপকূলবাসীর কাছে আজ বেদনাদায়ক স্মরণীয় দিন। ১৭ বছর পর এখনও কান্না থামেনি ঐসকল জেলে পরিবারের। নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে অনেক জেলের নাম।
জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর উপকূলীয় অঞ্চলে হঠাৎ ঝড়ে সাগর উত্তাল হওয়ায় বহু মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। প্রায় শতাধিক জেলে সাগরের পানিতে ডুবে মারা যায় তখন। ভয়াল ওই ঝড়ে ট্রলার ডুবিতে সন্তার হারা হয়েছে অনেক পিতা-মাতা, স্ত্রী হয়েছে স্বামীহারা, আর সন্তান হারিয়েছে তাদের উপার্জনক্ষম বাবাকে। এদের একেকটি দিন কাটে এখনও অর্ধাহার আর অনাহারে। অনেক স্কুলগামী সন্তানের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে এসব অসহায় পরিবার সরকারের কাছে সহযোগীতার দাবিতে কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের মানব বন্ধন, সড়ক অবরোধসহ স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি পালন করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন সরকার তাদের কোনো সহায়তা প্রদান করেননি। ওই সময় সরকারের চরম উদাসীনতা আর দায়ীত্বহীনতায় হতভাগা জেলেদের যেসব লাশ ভেসে আসে তার অনেককে শেয়াল কুকুরে খেয়ে ফেলে। নিহত জেলে পরিবারের সদস্যদের এখনও দিন কাটছে চরম অবাব অনটনের মধ্য দিয়ে।
লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা বশিরের পিতা সেলিম মাঝি ২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের ঝড়ে সাগরে ট্রলার ডুবিতে মারা গেছেন। লাশের দেখাও পায়নি স্ত্রী সন্তান। বশির জানান, তার পরিবারের সিদ্ধান্ত ছিল কাউকে সাগরে পাঠাবেন না মাছ শিকারে। কিন্তু সংসারের ভরন পোষনের দায়িত্ব এখন তার উপর। তাই জীবিকার টানে ছুটছেন ফের সাগরে মাছ শিকারে। বশিরের মত আরও অনেক জেলে শুধুমাত্র আর্থিক অনটনের কারনে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকারে যাচ্ছে সাগরে।
তবে এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গির হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে সকল জেলেদের জেলে কার্ডের মাধ্যমে ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকূলীয় সকল জেলেদের আবাসন এবং পূর্নবাসনের ব্যবস্থা হয়েছে।