আকতারুল ইসলাম আকাশ,ভোলা ॥ ভোলা সদর হাসপাতাল অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই খোয়া যাচ্ছে রোগী ও স্বজনদের ওষুধপথ্য, টাকা, মুঠোফোন, কাপড়চোপড়সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।
কয়েকজন রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে নানা বিড়ম্বনা তো আছেই, সেই সঙ্গে রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে ওষুধপথ্যসহ অন্য মালামাল। কারণ, প্রায় প্রতিদিনই এসব চুরি হচ্ছে।
পেটব্যথা নিয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন সদর উপজেলার দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের আছমা আক্তার আফিয়া (২৪)।
তাঁর দেখভালের কাজটি করছিলেন তাঁর স্বামী ইব্রাহিম। রাতে ওয়ার্ডে স্ত্রীকে ঘুমিয়ে রেখে হাসপাতালের বাইরে গরম পানি আনতে যান।
ফিরে এসে দেখেন, শয্যার পাশের ব্যাগটি নেই। ব্যাগে কয়েকটি ইনজেকশন, ওষুধ ও কাপড়চোপড় ছিল।
দৌলতখান উপজেলার চরপাতা গ্রামের হ্নদয় জানান, হাসপাতালে রাতের বেলায় কোনো পাহারাদার থাকে না।
এ সুযোগে ছিঁচকে চোরেরা রোগী ও স্বজনদের জিনিসপত্র চুরি করে নেয়। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে যদি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা যায়, তাহলে নিরাপত্তা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া এলাকার বাসিন্দা মনির বলেন, ‘গত রোববার রাতে গাইনি ওয়ার্ডের ভেতর থেকে তাঁর মোবাইল ফোন ও জিনিসপত্রভর্তি ব্যাগ চুরি হয়ে যায়।
গতকাল মেডিসিন বিভাগের এক রোগীর স্বজন কামরুল বলেন, ‘রাতে আউটডোরে ঘুমিয়েছিলাম। ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি, পকেটে মানিব্যাগ নাই।’ হাসপাতালে অবশ্য অভিযোগ জানাননি তিনি। তাঁর ভাষ্যমতে, অভিযোগ করে আর কী হবে। ওই টাকা তো আর ফেরত পাবেন না।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার গঙ্গাপুর গ্রামে জ্বর নিয়ে এক শিশু রোগীর অভিভাবক আনোয়ার রহমান আক্ষেপ করে বলছিলেন, প্রতিদিনই রোগীর জিনিসপত্র হারিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে রাত জেগে পাহারা দিতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে প্রায় প্রতিদিনই রোগী ও তাঁদের লোকজনের জিনিসপত্র চুরির খবর পাই। এসব চুরির ঘটনায় একটি চক্র জড়িত। হাসপাতালের বাইরের লোকজনের অবাধ যাতায়াতের কারণেই এমনটি হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইচ্ছা থাকলেও জনবলসংকটের কারণে আমরা ভালোভাবে হাসপাতাল নজরদারিতে আনতে পারছি না। জনবল পেলেই এসব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
ভোলা সিভিল সার্জন সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, হাসপাতালে এসব সমস্যা তাঁর নজরে আছে। হাসপাতাল চত্বরে প্রয়োজনে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।