মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর ফাতেমা আক্তার ইতি (১০) নামে এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত ২ আসামীকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দন্ড দিয়েছে হাইকোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। দন্ডিতরা হলেন, মঠবাড়িয়া উপজেলার বুখইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামের মৃত জাহিদ হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান স্বপন ও মোস্তফা জমাদ্দারের ছেলে সুমন জমাদ্দার। শিশু ফাতেমা মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে। সে একই উপজেলার বুখইতলা-বান্ধবপাড়ায় নানা বাড়িতে থেকে স্থানীয় হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।
জানাযায়, ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর সকালে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য ওই বিদ্যালয়ের মাঠে যায় ফাতেমা। দুপুরেও ঘরে না ফেরায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরদিন দুপুরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে তার উলঙ্গ ও ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তদন্তে শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে রিপোর্ট দেয়া হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার পুলিশ এ ঘটনায় ফাতেমার মামাতো ভাই মেহেদী হাসান স্বপনের সংশ্লিষ্টতা পান। পরে মেহেদী ও তার সহযোগী সুমন জমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
সুমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, তিনি ও মেহেদী মেয়েটিকে বাগডাসা দেখানোর লোভ দেখিয়ে বাগানে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয় সেজন্য পরে তারা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করেন।
২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. গোলাম কিবরিয়া রায়ে দুজনকে মৃত্যুদন্ড দেন। পরে হাইকোর্টে আসামিরা আপিল করেন। ২০২১ সালের ৩০ জুন হাইকোর্ট বিভাগ ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে আসামিদের খালাস দেন। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও মোহাম্মদ শিশির মনির।