বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল ॥ পটুয়াখালীতে ব্যবসার কথা বলে বন্ধুদের কাছ থেকে কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন মো. মেহেদী হাসান রাহাত (৩০) নামের এক যুবক। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী দুই বন্ধু পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত মো. মেহেদী হাসান পটুয়াখালী পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিসিক এলাকার বাসিন্দা। তিনি পটুয়াখালীতে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি করলেও নিজেকে একটি বহুজাতিক কোম্পানির ইমপোর্ট-এক্সপোর্টার বলে পরিচয় দিতেন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেহেদী বলতেন তিনি ঢাকায় ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট ব্যবসা করেন। পাশাপাশি ইউনিলিভার কোম্পানির একটি বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে সবাইকে টাকার অনুপাতে লভ্যাংশ দেবেন তিনি। মেহেদি বলতেন, লেনদেনের বিষয়ে অন্য কেউ যেন না জানে। এ ছাড়া ঢাকায় তিনি গাড়িও ব্যবহার করতেন। স্বনামধন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সেলফি তুলে নিজেকে এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে জাহির করতেন। এসব দেখে তাঁর প্রতি এলাকার সবারই আস্থা জন্মেছিল।
গত বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারণার দুটি মামলা করা হয়। যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁরা হলেন অভিযুক্ত মেহেদী হাসানের বন্ধু শহরের সবুজবাগের শাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত শফিকুল ইসলামের ছেলে আবু সাঈদ খান ও দক্ষিণ টাউন কালিকাপুর এলাকার আব্দুর রহমান হাওলাদারের ছেলে মো. মশিউর রহমান।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, মেহেদী তাঁর বন্ধু বরিশাল শহরের সহজ আইটির স্বত্বাধিকারী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদ খানের কাছ থেকে গত বছর ধাপে ধাপে ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা নেন। এ ছাড়া মশিউর রহমানের কাছ থেকে গত বছরের অক্টোবরে ১ লাখ টাকা নেন। এই বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও টাকা না দিয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আবু সাঈদ খান বলেন, ‘ব্যবসার কথা বলে বিভিন্নভাবে আমার কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়েছে মেহেদী। অথচ ও কোনো ব্যবসা কিংবা চাকরি কিছুই করত না। আর ওর আচরণ ও ব্যবহারে মনে হয়নি সে এত বড় প্রতারক। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে আদালতের মুখোমুখি হয়েছি।’
ভুক্তভোগী মশিউর রহমান বলেন, ‘বাবার জমানো টাকা থেকে ব্যবসার কথা বলে ১ লাখ টাকা নিয়েছে। আমাকে বলেছে, চাকরিরও ব্যবস্থা করে দেবে, সেই সুবাদে ১ লাখ টাকা ধার হিসেবে নিয়েছে। এখন শুনি আমাদের অনেক বন্ধুর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে সে পালিয়েছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার আইনজীবী গাজী আল মামুন ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সদর থানার বেঞ্চ সহকারী ফয়সাল মাহমুদ বলেন, মামলাটি আদালতে উপস্থাপন করলে বিচারক তা আমলে নিয়ে মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য অভিযুক্ত মেহেদী হাসান রাহাতের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।