বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল ॥ ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে পিরোজপুর জেলায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস বইছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে এ চিত্র দেখা গেছে।
যদিও বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করলেও সন্ধ্যার পরপরই বেড়েছে বৃষ্টির তীব্রতা। জেলার কঁচা, বলেশ্বর, কালিগঙ্গাসহ বৃহৎ নদ-নদীগুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে স্রোতের তীব্রতাও। ঝুঁকিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ।
এ দিকে শুক্রবার সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে সব চেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষরা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতিবৃষ্টি ও বাতাসের কারণে হাট-বাজারে দোকানপাট অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাটে কোনো মানুষ নেই।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধানের। প্রবল ঝোড়ো বাতাসে ধানসহ এবং সদ্য ধানের শিষ বেরোনো আমন ধানের গাছ সব পানিতে শুয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করেছেন চাষি ও কৃষকরা।
এ ছাড়াও রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
অপরদিকে জেলার সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলারসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে।
সন্ধ্যা নাগাদ জেলার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ আঘাত হানার আশঙ্কা থাকলেও এখন পর্যন্ত জেলার কোথাও কোনো সাইক্লোন শেল্টারে বা আশ্রয় কেন্দ্রে কাউকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, জেলার সাতটি উপজেলায় ৫৬১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ মোকাবিলায় জেলা শহরসহ সাতটি উপজেলায় আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের কাছে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা, ৪৬ বান্ডিল টিন, ৪১২ টন চাল এবং ৫ হাজার ৬০০ কম্বল রয়েছে।
এ ছাড়া দুর্গতদের সেবার জন্য ৬৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্যোগপূর্ব ও পরবর্তী মানুষের সেবা দিতে ১৭০০ সিপিপি সদস্য ও ৩৫০ জন স্কাউট সদস্য কাজ করবেন। উপকূল এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আরও জানান, জেলার সব চেয়ে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা মঠবাড়িয়ার মাঝেরচর ও খেতাছিড়া এলাকার মানুষের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।