• ৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ধ্বংসের মুখে রেণু পোনা

বিডিক্রাইম
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ১২:৩৭ অপরাহ্ণ
ধ্বংসের মুখে রেণু পোনা

বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল: রেনু পোনা আহরণ, সংরক্ষন, পরিবহন ও বাজারজাত করন আইনগত ভাবে সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ হওয়া সত্তে¡ও পেটের তাগিদে পটুয়াখালীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার জেলে সমুদ্র উপকূল ও নদীর তীরে চিংড়ির রেনু পোনা আহরণ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

১৯৯৯ সালে উপক‚লীয় সামুদ্রিক মৎস্য ব্যবস্থাপনা আওতায় এক জরিপে বলা হয় উপক‚লীয় এলাকা পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, হাতিয়া ও স›দ্বীপের ৬ লাখ লোক প্রতিবছর প্রায় ৩২ কোটি ৫৭ লাখ রেণু পোনা আহরণ করেন। এতে ধংস হচ্ছে সাগরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

জানা গেছে, দেশের মৎস্য সম্পদের মধ্যে ৪৭৫ প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের এবং ৩৬ প্রজাতির সামুদ্রিক চিংড়ি মাছ রয়েছে। এই সব মাছের পোনার বিচরন কেন্দ্র সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল।

সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা ছাড়াও পটুয়াখালীর মহিপুর, আলীপুর, মৌডুবী, গলাচিপা, রামনাবাদ, আগুনমুখাসহ প্রায় ২০টি নদীর তীর ও সমুদ্র তীর থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে রেনু পোনা আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন হাজার হাজার জেলে পরিবার। কিন্তু তাদের জানা নেই একটি পোনা ধরার কারনে লক্ষ লক্ষ অন্য ধরনের পোনা মরে যাচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিশেষ এক ধরনের সাদা চামচের পাত্র থেকে চিংড়ি রেণু বাছাই করে অন্য পাত্রে মজুদ করছে রেণু শিকারীরা। রেণু সংগ্রহের সময় অন্য প্রজাতির পোনা ও মাছের ডিম নদীর পাড়ে ফেলে পিশিয়ে মারছে। চিংড়ি রেণু ধরার পর তা বিক্রি করেন এক শ্রেণীর আড়ৎ মালিকদের কাছে।

এক একটি রেণু পোনা মহাজনের কাছে বিক্রি হয় ২ থেকে ৩ টাকায়, মহাজন বিক্রি করছেন ৭ থেকে ১০ টাকায়। অনেক সময় পোনা ধরা ও পরিবহনের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহীনির হাতে আটক হয়ে জেল জরিমানার শিকার হলেও ক্ষুধার তাড়নায় আইনকে অমান্য করতে বাধ্য হন উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবারগুলো। মশারি ও বেহুন্দি জাতীয় জাল দিয়ে একটি চিংড়ি পোনা আহরণ করতে গিয়ে অন্যান্য প্রজাতির অসংখ্য পোনা নষ্ট করছেন তারা।

জীব বৈচিত্র গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেছেন, সাগর পারের জেলেরা চিংড়ি পোনা রেখে অন্যান্য পোনা গুলো সাগরে না ফেলে সাগর পাড়ে বালিতে ফেলে দেয়।

এতে সাগরের অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। একটি রেনু আহরন করতে অন্যান্য অনেক প্রজাতির মাছ নষ্ট হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানিয়েছেন, রেণু নিধনের ফলে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ নিধন হচ্ছে।

বিভিন্ন প্রশিক্ষন কর্মশালার মাধ্যমে জেলেদের রেনু পোনা না ধরার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং কোষ্টগার্ড ও বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহীনির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।