বিডি ক্রাইম ডেস্ক, বরিশাল ॥ টাকার অভাবে যাবজ্জীবন দণ্ড ভোগের পরও সাড়ে সাত বছর জেল খেটে অবশেষে মুক্তি পেলেন শরীয়তপুর জেলার গোসাইর হাটের আলাউদ্দিন গাজী। গ্রেফতারের পর টানা ৩০ বছর জেলে থাকার ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রচার হলে নজরে আসে উচ্চ আদালতের।
পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আলাউদ্দিন গাজীর জামিন দিলে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবুল বাশার। তিনি জানান, উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে আলাউদ্দিনকে কারামুক্তি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ২৫ জানুয়ারি ১ লাখ টাকার চুক্তিতে শরীয়তপুরে গোসাইর হাটে খুন করা হয় সেলিম ঢালী নামের এক ব্যক্তিকে। এ ঘটনায় মামলা হলে দুদিন পর ২৭ জানুয়ারি গ্রেফতার হন আলাউদ্দিন গাজী।
মামলার অন্যান্য আসামির বয়ানে উঠে আসে হত্যাকাণ্ডের সময় আলাউদ্দিন গাজী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে ২০০১ সালের ১২ জানুয়ারি ২৬ আসামির মধ্যে আলাউদ্দিন গাজীসহ ১৫ জনের যাবজ্জীবন হয়।
এরপর একে একে হাইকোর্টে সব আসামির মামলা শেষ হয়। যাবজ্জীবন সাজা খেটে বেরও হয়ে যান সবাই। তবে টাকার অভাবে আপিল করতে পারেননি আলাউদ্দিন গাজী। তার নিজের সংসার না থাকায় এতদিন আলোচনায় আসেনি নাম। এরমধ্যে যাবজ্জীবন সাজা ভোগের পর আরও সাড়ে ৭ বছর কারাগারে কেটে যায় আলাউদ্দিনের। তবে স্বজন হিসেবে বেঁচে থাকা তার দুই ভাতিজির সন্ধানে ৩০ বছর পর খোঁজ মেলে আলাউদ্দিন গাজীর।
এ নিয়ে চলতি বছরের ২৪ মে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সংবাদ প্রকাশ করে। ২৬ জুন উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আলাউদ্দিন গাজীর সাজা আটকের তারিখ থেকে কেনো গণনা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, আইজি প্রিজন্স, জেলা প্রশাসক বরিশাল, জেলা প্রশাসক শরীয়তপুর এবং বরিশাল কারাগারের জেলারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের নেতৃত্বাধীন অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। সেই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামিন লাভ করেন আলাউদ্দিন গাজী।