নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক বুরহানউদ্দিন মুজাক্কির মারা গেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয় বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী মুজাক্কির দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তা বাজারের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
তিনি উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের নোয়াব আলী মাস্টারের ছেলে। নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ¯œাতকোত্তর শেষ করে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন।
নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে শুক্রবার বিকালে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
তাঁর মৃত্যুর খবরে উপজেলার চাপরাশির হাট বাজার এলাকায় রাতেই প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে এলাকাবাসী। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। হয়তো তাদের এই দাবি আজীবন পত্র পত্রিকার পৃষ্ঠায় শিরোনাম হয়ে থাকবে। কিন্তু বাস্তবে তাঁরা এর কোনো সঠিক বিচার পাবেনা। আমাদের চোখের জল শুকিয়ে গেলে কেটে যাবে বিচারের আশার আলো।
সাংবাদিকরা যে প্রতিনিয়ত সমাজের বেসুমার অন্যায়-অনাচারের খবর তুলে ধরে সকলের উপকার করছেন, সাংবাদিকতার কট্টর সমালোচকও তা অস্বীকার করতে পারবেন না৷ অথচ বাংলাদেশে সাংবাদিকদেরই যেন কোনো ‘বন্ধু’ নেই৷
কথায় আছে, ‘গরম ভাতে বিড়াল বেজার, উচিত কথায় বন্ধু বেজার৷’ সাংবাদিকদের কাজই হলো প্রকৃত খবরটা জানানো৷ তো খবরটি যাঁর বিরুদ্ধে, তিনি বেজার হবেন – এটাই স্বাভাবিক৷ কিন্তু ‘বেজার’ ব্যক্তি যত ক্ষমতাশালীই হোক, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাংবাদিকের মর্যাদা এবং অধিকার সুরক্ষার ব্যবস্থা তাঁকে নিরাপদ রাখে৷ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বাংলাদেশে সেই অবস্থা হয়নি৷ সংবাদমাধ্যম খুব দ্রুত অনেক বেশি বিস্তৃত হয়েছে৷ তা নিয়ে গর্বও করেন অনেকে৷ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকেই এর কৃতিত্ব নিতে দেখা যায়৷ বিশেষ করে দেশে যে টেলিভিশন চ্যানেল এক থেকে অনেক হয়েছে এবং এর কৃতিত্ব যে শুধু তাঁদেরই প্রাপ্য তা তাঁরা খুব জোর গলায় বলেন৷ কিন্তু সাংবাদিকের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁরা ‘সময়মতো’ একদম নীরব৷ দেশে এখন সেই সময়ই চলছে৷
বিভিন্ন গণমাধ্যমে থেকে জানা, নিহত মুজাক্কিরের ভাই আতœীয়স্বজন তাঁরা বলছেন, সংঘর্ষের ভিডিও ধারণা করাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মুজাক্কিরের। তাই তো খুব কাছ থেকে টার্গেট করেই ৬২টি বুলেটের ক্ষত বসিয়ে শেষ খেলা খেলেছিলেন ঝুকিপূর্ণ পেশায় আসা মুজাক্কিরের জীবন। তাদের টার্গেট মিস হয়নি মুজাক্কির ভাই।
লেখক: আকতারুল ইসলাম আকাশ সংবাদদাতা ভোলা।