বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো পাঁচটি কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দিলেও ঝালকাঠির বাজারে তা প্রতিফলন হচ্ছে না। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন, আলু, পেঁয়াজ, ডিম ও চিনি।
এছাড়া অন্য নিত্যপণ্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো পাঁচ কৃষিপণ্য দাম বেঁধে দেয় সরকার। তবে তা ঝালকাঠির বাজারে কার্যকর করা করা হচ্ছে না।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে কেজি প্রতি আলুতে এখনো ১০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। পেঁয়াজেও কেজিতে ১৫ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি এসব পণ্য আগে বেশি দামে ক্রয় করায় এখন দাম কমিয়ে রাখা যাচ্ছে না।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে ঝালকাঠি বড় বাজারে দেখা যায়, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, আলু ৪৫ টাকা, চিনি ১৩০ টাকা, সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা এবং ডিমের হালি ৫০ টাকার ওপর। যদিও নতুন দামে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা ৬৫ টাকা, আলু ৩৬ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, সয়াবিন ১৬৯ টাকা এবং ডিমের হালি ৪৮ অর্থাৎ প্রতি পিস ১২ টাকা দরে।
শহরের আরদ্দারপট্টি এলাকার ডিম ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের ডিম আগের দামে কেনা তাই সরকার বেঁধে দেয়া দামে ডিম বিক্রি করতে পারছি না।
পেঁয়াজ ও আলুর আড়দ্দার আকন ট্রেডার্সের মালিক টিটু আকন বলেন, আমাদের এখনো পুরোনো দরে পেঁয়াজ ও আলু কেনা আছে। তাই সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে পারছি না। কিছুদিনের মধ্যেই এসব কৃষি পণ্যের দাম কমে যাবে।
এদিকে সরকার কেজিপ্রতি চিনি ১২০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা করে। অপরদিকে বাজারে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।
বড়বাজার ও চাঁদকাঠি বাজার ঘুরে দেখা যায়, করল্লা ৭০ টাকা, ফুলকপি বাঁধাকপি ৫০ টাকা, বড় লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাকরল ৬০ টাকা, ছোট লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পুই শাকের মুঠি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লাউশাক ৫০ টাকা, গরুর গোশত ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কোনো অবস্থাই গরুর গোশতের দাম কমছে না। খাসি এক হাজার টাকা, ব্রয়লার মুরগী ১৬৫ টাকা, সোনালি ২৯০ টাকা, লেয়ার ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৪০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় ইলিশ এক হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা, রুই-কাতলা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, চাষের কৈ মাছ ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা, পাপদা ৫০০ টাকা, পোমা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সুরমা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সাগরের পোমা ২০০ টাকা, পাঁচ মিশালী মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জামিল হোসেন নামে এক চাকরিজীবী বলেন, বাজারের দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা ঝুলানো থাকে না। যার ফলে ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে সব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিং জোরদার করা উচিৎ।
ঝালকাঠি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বাজারে মনিটরিং করার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। দোকানগুলোতে এখনো আগের দামে কেনা কিছু কৃষি পণ্য আছে। এগুলো শেষ হলেই শিগগিরই সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষি পণ্য পাওয়া যাবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।