নাজমুল হক মুন্না, উজিরপুর (বরিশাল) : জেলার উজিরপুরে ভারতের এক নারী বরিশালের উজিরপুরের উপজেলা নির্বাচন অফিসে জালিয়াতী করে ভোটার হতে এসে স্বামী ও ভাসুরসহ পুলিশের খাঁচায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় নির্বাচন অফিস থেকে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ ভারতের নারী ভোটার সাবিত্রী বড়ীয়া সহ উপজেলার সাতলা ইউনিয়েনর এবাদুল হক ও তার ভাই এনামুল হককে গ্রেফতার করে । পুলিশ ও নির্বাচন সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে উজিরপুর উপজেলায় নতুন ভোটারদের যাচাই-বাছাই, ফিঙ্গারিং সহ ছবি তোলা কার্যক্রম শুরু হয়। বিকেলে এক ভারতীয় নাগরিক উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাতলা গ্রামের ০৬ নং ওয়ার্ডের এবাদুল হকের স্ত্রী হালিমা খাতুন নামে পরিচয় দিয়ে ভোটার হওয়ার শুনানিতে হাজির হন উপজেলা নির্বাচন অফিসে । এসময় সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। শুনানিতে ভারতীয় ওই নারীর কথাবার্তায় সন্দেহভাজন মনে হলে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করলে বিষয়টি সামনে আসে। ভারতীয় ওই নারীর সাথে ভারতে থাকার সময় সাতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা এবাদুল হকের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন ওই দেশের নাগরীক সবিত্রী বড়ীয়া। প্রেমের টানে ওই নারী সন্তান রেখে সাতলার ছেলে এবাদুল হকের সাথে ৬ বছর পূর্বে ভারতে নাম পরিবর্তন করে বিয়েতে আবদ্ধ হয়। গত একবছর পূর্বে স্বামী এবাদুল হকের সাথে বাংলাদেশে এসে হালিমা খাতুন পরিচয় দিয়ে বসবাস করেন। তার কিছুদিন পর স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ ও ইউপি চেয়ারম্যান এর সহায়তায় সাতলা ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন করে। সেই জন্মনিবন্ধন দিয়ে ভোটার তথ্য ফরম পূরন করে । জন্মনিবন্ধনে ওই নারীর পিতা-মাতার নাম দিয়েছে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার নান্দুহার গ্রামের স্বামী এবাদুল হকের ছোট বোনের শ্বশুর বাদশা মিয়া ও শাশুড়ি আনোয়ারা বেগমেকে । তাদের ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে এবং সাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনের প্রত্যায়ন সনদপত্র ব্যবহার করে নতুন ভোটার হতে আসে ওই ভারতের নারী নাগরীক ।
উজিরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো: আব্দুর রশিদ জানান, ভারতের ওই নারী নির্বাচন অফিসে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করে। ওই নারীর আবেদনেনর প্রেক্ষিতে শুনানির সময় তার নাম ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে তার ভাষা ও কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় তাদেরকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। সাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহিন হাওলাদার বলেন , নির্বাচনী তথ্য কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরের পরে আমি প্রতি স্বাক্ষর দিয়েছি। উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মোঃ তৌহিদুজ্জামান সোহাগ জানান, ভারতীয় নাগরীক ভুল তথ্য দিয়ে ভোটার হওয়ার চেষ্টা ও তাতে সহযোগিতা করার কারণে সাবিত্রী , তার স্বামী এবাদুল হক ও বাসুর এনামুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে।